JuboKantho24 Logo

আত্মপর্যালোচনা

  • কাউসার আহমদ সুহাইল

মাত্র ২ কোটি ইহুদীদের কাছে পরাস্ত পৃথিবীর দুইশত কোটি মুসলিম। নিজস্ব বৈধ কোন ভূখণ্ড ও খনিজ সম্পদ না থাকলেও অন্যের জনপদ দখল করে পুরো বিশ্বকে নিয়ন্ত্রণ করছে তারা মেধা ও বুদ্ধির জোরে। এই মেধা ও বুদ্ধি খাটিয়ে হাতে গোনা কয়েকশ নাস্তিক নিয়ন্ত্রণ করছে ১৮ কোটি মুসলমান ও লক্ষ লক্ষ আলেম উলামা সমৃদ্ধ এই বাংলাদেশকে। দেশের গতি প্রকৃতির একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ যে তাদেরই হাতে “শরীফ থেকে শরীফা” এর মতো ট্রান্সজেন্ডারের গল্পটি পাঠ্য বইয়ে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত এর আরও একটা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা ও যথাযথ পদক্ষেপের অভাবে আমরা এদেশের উলামায়ে কেরাম সংখ্যায় যতই বাড়ছি শক্তিতে ততই পিছিয়ে যাচ্ছি নিদারুণভাবে। মসজিদের লাখো মিম্বার আর মাহফিলের বিশাল শ্রোতা থাকার পরও হারিয়ে ফেলছি এদেশের তাওহীদি জনতার নিরংকুশ আস্থা ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা ও কষ্টসাধ্য গবেষণার পরিবর্তে আমরা সস্তা আবেগ চর্চায় বিভোর। তাই সমস্যার গভীরে যেতে পারছি না। সমাধানের পথ থেকে যাচ্ছে অজানা। শত্রু মিত্রের পার্থক্য করতেও ভূল করছি বারংবার। আমরা যে জানিনা সেটা জানার ফুরসত হচ্ছে না অনেকের। যে জাতির সূচনা ইকরা বা পড় শব্দ দিয়ে সে জাতির রাহবাররাও আজ পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। পাঠ্যপুস্তকের বাইরে কুরআন হাদীসের চর্চা ও গবেষণা করার তাগাদা অনুভব করছে না। এ কারণ ইসলামী রাজনীতি করা দরকার নাকি নিষ্প্রয়োজনীয়? গনতন্ত্র নাকি সশস্ত্র আন্দোলন?

মোটাদাগের এ বিষয়গুলোর মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ সাবজেক্ট আজও অমীমাংসিত হয়ে আছে যুগের পর যুগ। একারণে তৈরি হচ্ছে পরস্পরের মাঝে ভুল বুঝাবুঝির সীমাহীন দ্বন্দ্ব। আস্তে আস্তে আমরা দূরে সরে যাচ্ছি কুরআন হাদীসের স্পিরিট থেকে। আর তাই ঐক্যের পরিবর্তে বেছে নিচ্ছি বিভেদের পথ। কাছে আসার পরিবর্তে তৈরি করছি দূরত্বের গল্প। ভালোবাসার পরিবর্তে ঘৃনার চাষ করে হৃদয়ে রোপন বিদ্বেষের চারা। লিপ্ত হচ্ছি মিল না খুঁজে অমিল খুঁজে অন্য থেকে আলাদা করে নিজেকে অন্যন্য মনে করার অসুস্থ চর্চায়। আর এর ফলে নিজেদের মাঝে পরস্পর জেহাদ করে ক্ষয় করছি শক্তি সামর্থ।

নিরাপদ দূর থেকে এসব দেখে শত্রুরা হাসে আর গ্রহন করে আমাদের নিঃশেষের চুড়ান্ত পরিকল্পনা। তাই আমরা যখন একটা মাদরাসা ভেঙে আরেকটা মাদরাসা গড়ি তখন ওরা জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, নেটোর মতো ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী শত-শত প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে। ইল্লাল্লাহ জিকির করা যাব কি যাবে না তা নিয়ে আমরা যখন মাইকে গলা ফাটাই। তখন তারা পূর্ব তিমুর ও দক্ষিণ সুদানের মতো আর কোন কোন মুসলিম ভূখণ্ড দখল করা যায় তার পরিকল্পনা করে। তাই চারদিকে পতনের প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছি।

অবহেলিত সম্ভাবনারগুলোর আত্মচিৎকার আমাকে বিব্রত করে বারবার। সীমাহীন ভূখণ্ডের এতো বিশাল জনশক্তির একজন সদস্য হয়েও আমি অসহায়ত্ব অনুভব করছি। কবি নজরুল ইসলামের কবিতার ঐ চরণটি কেনো যেন বারবার মনে পড়ছে। “বাহিরের দিকে মরিয়াছি যত ভিতরে দিকে ততো গুনতিতে মোরা বাড়িয়া চলেছি গরু ছাগলের মতো।

Jubokantho24 Ad
এ জাতীয় আরো সংবাদ
এ জাতীয় আরো সংবাদ