বয়স বাড়লে বার্ধক্যের লক্ষণগুলো বাড়তে থাকে। এর কোনো ব্যতিক্রম নেই। কিন্তু ঠিক কোন বয়সে পৌঁছোলে, তাকে বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা বলা যেতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর জানেন কি? উত্তরটি আপনাকে চমকে দিতে পারে।
বার্ধক্য কোন বয়সে শুরু হয়, এটি নিয়ে হালে একটি গবেষণা করেছিল জার্মানির বার্লিন শহরের হামবোল্ট ইউনিভার্সিটি। তাদের গবেষণায় উঠে এসেছে বার্ধক্যের প্রকৃত বয়স। অর্থাৎ ঠিক কত বছর পেরোনোর পরে কাউকে বুড়া বা বুড়ি বলা যেতে পারে, তার বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা হয়েছিল এখানে।
বার্ধক্যের বেশ কয়েকটি লক্ষণ রয়েছে। এর মধ্যে যেমন আছে শরীরের উপর নানা ধরনের প্রভাব। তেমনই রয়েছে মনের উপরেও প্রভাব। বার্ধক্য কোনো বয়স থেকে শুরু হয়, তা বোঝার জন্য হামবোল্ট ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে সাহায্য নেয়া হয় স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লুক্সেমবার্গ এবং গ্রিফসওয়াল্ড ইউনিভার্সিটির মনোবিদ্যা বিভাগের চালানোর সমীক্ষার। সেখান থেকেই একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন গবেষকরা।
এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে ‘সাইকোলজি এবং বার্ধক্য’ নামক জার্নালে। সেখান থেকে জানা গিয়েছে, এই পরীক্ষার জন্য নানা সময়ে জন্মানো ১৪ হাজার ৫৬ জনকে বেছে নেয়া হয়েছিল। তাদের শরীরের নানা ক্ষমতার পাশাপাশি মানসিক গড়নের উপরেও সমীক্ষা চালানো হয়েছে। আর সেখান থেকেই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন বিজ্ঞানীরা।
দেখা গেছে, গত কয়েক দশকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির কারণে মানুষের গড় আয়ু যেমন বেড়েছে, তেমন পিছিয়ে গেছে বার্ধক্যের বয়সও। অর্থাৎ আজ থেকে ২০ বছর আগে কোনো মানুষকে যে বয়সে এসে বার্ধক্যে প্রবেশ করা বলে মনে হতো। এখন আর বার্ধক্যে প্রবেশের বয়স সেটি নেই, বরং তার থেকে অনেক বেড়ে গেছে। সেই বয়সটি এখন কত?
গবেষণার ফল বলছে, কয়েক দশক আগেও ৬৭ বছরকে মোটামুটি বার্ধক্যের বয়স বলে ধরা যেত। কিন্তু এখন মোটেও তা নয়। বরং এখন বার্ধক্যে পা রাখার গড় বয়স ৭৬.৮ বছর। নারী এবং পুরুষের মধ্যে বিচার করে গড় করলে এই বয়সটি আসে।
বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, শরীর যেমনই থাক না কেন বার্ধক্যের সঙ্গে মনের গভীর যোগ আছে। যারা খুব অর্থকষ্টে দিন কাটান, বা যারা একাকিত্বে ভোগেন— তাদের ক্ষেত্রে বার্ধক্যের লক্ষণগুলি অন্যদের তুলনায় একটু আগেই চলে আসতে পারে।