JuboKantho24 Logo

ভালো থাকার কী কী উপায় আছে ইসলামে?

পৃথিবীতে কে ভালো থাকতে না চায়? চারদিকে যাদের দিকে তাকাই না কেন দেখা যাবে তিনি যা করছেন সবই নিজে একটু ভালো থাকার চেষ্টা করছেন। দিনরাত সবাই ছুটছেন শুধু ভালো থাকার জন্যই। ভালো থাকতে চাওয়া অবশ্যই ভালো ইচ্ছা কিন্তু থাকবেন কীভাবে? ইসলামে এ বিষয়ে কী বলা আছে?

ভালো থাকার কী কী উপায় আছে ইসলামে?

পৃথিবীতে কে ভালো থাকতে না চায়? চারদিকে যাদের দিকে তাকাই না কেন দেখা যাবে তিনি যা করছেন সবই নিজে একটু ভালো থাকার চেষ্টা করছেন। দিনরাত সবাই ছুটছেন শুধু ভালো থাকার জন্যই। ভালো থাকতে চাওয়া অবশ্যই ভালো ইচ্ছা কিন্তু থাকবেন কীভাবে? ইসলামে এ বিষয়ে কী বলা আছে?
ইসলামী বিধিবিধান ও সংস্কৃতি অনুযায়ী চললে ভালো থাকা সহজ।

ইসলামী বিধিবিধান ও সংস্কৃতি অনুযায়ী চললে ভালো থাকা সহজ।

একটা বিষয় কল্পনা করুন, আপনি যদি পুরো পৃথিবীতে শুধু একা থাকতেন তাহলে ভালো থাকার বিষয় কী থাকতো? অবশ্যই শরীর। শরীর ভালো রাখার জন্য নিজেকে যত্নশীল হতে হবে। তবে আপনি যদি ইসলামী বিধিবিধান ও সংস্কৃতি অনুযায়ী চলেন তাহলে ভালো থাকা আরও সহজ হবে।

আগে আগে ঘুমানো, আগে আগে ঘুম থেকে উঠা

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এশার নামাজের পর আর কথা বলতেন না। ঘুমিয়ে পড়তেন (বুখারি ৫৬৮)। সাহাবায়ে কেরামও তাই করতেন। সবাই আগে আগে উঠতেন। ফজর পড়তেন। এই অভ্যাস যদি কোনো মানুষের থাকে তাহলে তার ঘুম সময়মতো হওয়ার কারণে অবশ্যই ভালো থাকবেন। ঘুম অনেক অসুস্থতা থেকে যেমন বাঁচিয়ে রাখে তেমনই মানসিক প্রশান্তিও দেয়।

আল্লাহ তাআলা রাতকে সৃষ্টি করেছেন আমাদের ঘুমের জন্য। বিশ্রাম নেয়ার জন্য। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর তিনিই তোমাদের জন্য রাতকে আবরণ ও নিদ্রাকে আরামপ্রদ করেছেন এবং দিনকে করেছেন জাগ্রত থাকার সময়।’ (সুরা ফুরকান ৪৭)

খাবার পরিমিত খাওয়া

আমরা রোগাক্রান্ত হলে চিকিৎসক সর্বপ্রথম আমাদের খাবারে নিয়ন্ত্রণ আনতে বলেন। কী খাওয়া যাবে কী খাওয়া যাবে না তা বলে থাকেন। তাই এই পেটকে ভালো রাখার জন্য নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পেটের এক তৃতীয়াংশ ভাগ আহারের জন্য, এক তৃতীয়াংশ ভাগ পানির জন্য আর এক তৃতীয়াংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য। (ইবনে মাজাহ ৩৩৪৯)

সময়মতো নামাজ আদায়

সময়মতো নামাজ আদায় করলে শারীরিক অবসন্নতা দূর হয়। পানির স্পর্শ যেমন শারীরিক প্রশান্তি এনে দেয় তেমনই আল্লাহ তাআলার জন্য কিছু সময় দুনিয়াকে ভুলে থাকা মানসিক প্রশান্তি এনে দেয়। নামাজ একাগ্র চিত্তে আদায় করার জন্য রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

এমনভাবে আল্লাহর এবাদত কর, যেন তাকে তুমি দেখতে পাচ্ছ। আর যদি দেখতে না পাও, তবে ভাবো তিনি তোমাকে দেখতে পাচ্ছেন। (বুখারি ৫০, মুসলিম ৮)

নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা না করা

দুনিয়াতে আমরা যা পাই সব আল্লাহ তাআলার দেয়া নেয়ামত। আমরা চেষ্টা করি মাত্র। আবার কোনো কিছু না পাওয়াটাও আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা। আমার জীবনযাত্রা কেমন হবে তা আল্লাহ তাআলাই ঠিক করে দেন। তাই আমাকে দেখে যেমন অন্যের হতাশ হওয়ার প্রয়োজন নেই তেমনই অন্যদের আমারটা দেখে ঈর্ষান্বিত হওয়ারও কিছু নেই।

সুরা কাহাফে আল্লাহ তাআলা এক ব্যক্তির ফসলের বাগান ধ্বংস করে দিয়েছেন নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করার জন্য এবং কেয়ামতকে অস্বীকার করার জন্য। তাই নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করে যেমন আল্লাহ তাআলার নেয়ামতকে অস্বীকার করা যাবে না তেমনই নিজের না পাওয়া নিয়ে হতাশ হওয়া যাবে না। ভাবতে হবে হয়ত আল্লাহ তাআলা আমাকে আরও ভালো কিছু দেবেন।

মানুষ অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়। আল্লাহর নির্দেশ পালনের ক্ষেত্রে নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করার দরকার নেই। আল্লাহর সম্মান সবার ওপরে।

আয়েশা (রা.) বলেছেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, মানুষ নাখোশ হলেও যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুযায়ী কাজ করে, মানুষের বিপরীতে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট হয়ে যান।’ (তিরমিজি ২৪১৪)

আস্থা রাখুন রবের ওপর

সর্বদা আল্লাহ তাআলার ওপর ভরসা রাখলে জীবনে কখনোই হতাশা কাজ করবে না। কোনো কিছু না পেলে ভাবতে হবে, ‘আল্লাহ তাআলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনিই হলেন উত্তম কর্মবিধায়ক’। (সুরা আলে ইমরান ১৭৩)

রাগ করা যাবে না

রাগ কখনো কল্যাণকর হয় না। আপনি যেকোনো সিদ্ধান্ত নিন ঠান্ডা মাথায়। তাহলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আফসোস করতে হবে না। আমাদের জীবনের অনেকগুলো ঘটনার জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হয় শুধু রাগের মাথায় সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে। রাগ করলে অন্যের যা ক্ষতি হয় তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় নিজের।

রাগের বশবর্তী হয়ে কারও ক্ষতি করে ফেলা বীরত্ব নয় বরং বীরত্ব হলো, কঠিন রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘সে ব্যক্তি শক্তিশালী নয়, যে ব্যক্তি কুস্তি লড়ে অন্যকে ধরাশায়ী করে, বরং প্রকৃতপক্ষে সে ব্যক্তিই শক্তিশালী, যে রাগের সময় নিজেকে সংবরণ করতে পারে।’ (বুখারি ৬৮০৯)

অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে

সামাজিকভাবে ভালো থাকতে হলে যেমন অন্যের ওপর নিজের রাগ দেখানো যাবে না তেমনই অন্যের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে। বিপদ আপদে সাহায্য করতে হবে। তাহলে সমাজে ভালো থাকা যাবে। সমাজে ভালো পরিবেশে থাকাটাও ভালো থাকার একটি বিষয়। সমাজে অন্যের সাহায্য করলে আল্লাহ তাআলা আপনাকে সাহায্য করবেন। এতে করে আপনি ভালো থাকবেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যতক্ষণ একজন মানুষ অন্য মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত থাকবে, আল্লাহ তাআলাও তার কল্যাণে নিয়োজিত থাকবেন।’ (মুসলিম ৬৭৪৬)

Jubokantho24 Ad
এ জাতীয় আরো সংবাদ
এ জাতীয় আরো সংবাদ