সম্পদ নিয়ে বেশ আলোচনায় রয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি ও তার পরিবারের সম্পদের পরিমাণ দেখে বিস্মিত হয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা। তবে শুধুমাত্র বেনজীরের স্ত্রী জিশান মির্জার সম্পদ দেখে চোখ কপালে উঠেছে দুদক কর্মকর্তাদের। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের চেয়েও তাদের সম্পদের ফিরিস্তি অনেক বড়।
জানা গেছে, বেনজীর আহমেদ নিজেকে ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখতে স্ত্রী ও দুই মেয়ের নামে সম্পত্তির পাহাড় গড়ে তুলেছেন। স্ত্রী জিশান মির্জার নামে একাধিক কোম্পানি খুলে তাকে কোম্পানির চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে অগাধ সম্পদ গড়েছেন তিনি। স্ত্রীর নামেই কিনেছেন প্রায় ১৪২ একর (৪৬৮ বিঘা) জমি। আর বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের নামে এখন পর্যন্ত ২০৫ একর সম্পদের সন্ধান মিলেছে।
গত ২৩ মে দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বেনজীর আহমেদের সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তার সম্পদ কেনার ৮৩টি দলিল জব্দেরও আদেশ দেওয়া হয়। তবে দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরবর্তী ধাপের অনুসন্ধানে বেনজীর পরিবারের আরও সহায়সম্পত্তি বের হতে পারে।
এদিকে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানে বেনজীর আহমেদের পরিবারের মোট ৯ হাজার ১৯২ বর্গফুটের ৪টি ফ্ল্যাটের সন্ধান পেয়েছে দুদক। এর মধ্যে একটি তার মেয়ে ও বাকি তিনটি তার স্ত্রী জিশানের নামে কেনা। ২০২৩ সালের ৫ মার্চ মাত্র ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা তিনি ফ্ল্যাটগুলো ক্রয় করেন। একদিনে খুব সামান্য টাকায় কীভাবে তিনি চারটি ফ্ল্যাট কিনলেন তা নিয়ে পুলিশ বিভাগেই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
দুদক কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীর গুলশানের মতো অভিজাত এলাকা র্যানকন আইকন টাওয়ারে একদিনে ‘পানির দামে’ চার ফ্ল্যাট কেনার বিসয়টি আমাদের হতবাক করেছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৩৫৩ বর্গফুট আয়তনের দুটি ফ্ল্যাটের দাম ৫৬ লাখ টাকা করে। অন্য দুইটি ফ্ল্যাট ২ হাজার ২৪৩ বর্গফুটের, বেনজিন সাড়ে ৫৩ লাখ টাকা করে দিয়ে তা কিনেছেন। অর্থাৎ, প্রতি বর্গফুট মোট ফ্ল্যাটের দাম পড়েছে মাত্র ২ হাজার ৩৮৩ টাকা করে।
অন্যদিকে জমি ও ফ্লাট ছাড়াও বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার, তিনটি বিও হিসাব ও ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র খুঁজে পাওয়া গেছে।