–মুফতি শামসুদ্দুহা আশরাফি
ক’দিন আগে আমি একটি লেখায় ও ভিডিওতে আহবান জানিয়েছিলাম, কওমী মাদ্রাসা ও জেনারেল দ্বীনদার শ্রেনীর মাঝে ইসলামী রাজনীতি নিয়ে ব্যাপকভাবে আলোচনা পর্যালোচনা হওয়া দরকার।
প্রচলিত পদ্ধতির বাস্তব অবস্থান ও এর শরয়ী মানদণ্ডে মূল্যায়ন প্রকাশ করা জরুরি। কারণ ইসলামী রাজনীতি নিয়ে প্রচুর বিভ্রা*ন্তিকর, অপ*প্রচার, মিথ্যা*চার ও প্রোপাগাণ্ডা সমাজে চালু আছে। এসব সমাধান না করা গেলে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো অগ্রসর হতে পারবেনা।
ইসলামী রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল নিয়ে কি পরিমাণ অপ*প্রচার, মিথ্যা*চার ও প্রোপা*গাণ্ডা সমাজে চালু আছে গতকাল এক ভাইয়ের একটি ইসলামী দলে অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে তা আবারও সামনে আসলো। তার অনুসৃত ও অনুসারীদের কারো কারো লেখালেখি ও আচরণে মনে হচ্ছে তিনি ইমানহারা হয়ে গেছেন! অথচ তিনি খেলাফত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে পথচলা মানুষদের কাতারে নিজেকে শামিল করেছেন।
অবশ্য এ মাওলানাও একসময় এ ধরনের কথাবার্তা বলতেন। তবে তার কথাবার্তার একটা কৌশল ছিল তিনি সবজায়গায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে সামনে রেখে কথা বলতেন। ফলে অনেকে মনে করতো সে তো আমাদেরকে বলছে না। এখনো কেউ কেউ বলতে চাচ্ছেন ইসলামী আন্দোলনের রাজনীতি আর অন্যদের রাজনীতি নাকি ভিন্ন!
বাকী বিরুদ্ধবাদীদের উদ্দেশ্য যে সব ইসলামী রাজনৈতিক দল এখন তো ক্লিয়ার হওয়ার কথা। এখনো কারো কাছে স্পষ্ট না হলে তাকে বিরোধিতার ক্ষেত্রে মাজুর মনে করতে হবে।
ইসলামী রাজনীতি নিয়ে অপপ্রচারকারীদের বড় একটা হাতিয়ার হল,দলগুলোর বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অভিযোগ আরোপ করা। এরপরই তারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে বস্তায় বস্তায় দলিল নিয়ে হাজির হন। আর অনুসারীরা মনে করে এই তো ইসলামী রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে হাজার হাজার দলিল!!
প্রশ্ন হল,আদৌ কোন ইসলামী রাজনৈতিক দল বলেছে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই!? অথবা তাদের দলীয় কাগজপত্রে, কোথাও বলা আছে যে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবো?
তাহলে কিসের ভিত্তিতে এসব বলা হচ্ছে। নিজের মনমতো একটা জিনিস কারো উপর চাপিয়ে দিয়ে এভাবে লেখালেখি কতটা যুক্তিযুক্ত? আগে তো বিরোধিতার ভিত্তি দাঁড় করান। তারপর না-হয় বিরোধিতা করলেন। ভিত্তিহীন জিনিসের উপর বিরোধিতা কখনো ইনসাফ ভিত্তিক হয়না।
এখন বলে যে গণতান্ত্রিক নিয়ম মেনে দল চালানো, রাজনীতি করা এসবই নাকি গণতান্ত্রিক হওয়ার জন্য যথেষ্ট। আচ্ছা আপনি, আমি আমরাও তো বহু জিনিসই গণতান্ত্রিক দেশের নিয়ম মেনেই করি তাহলে একই অভিযোগ কি আমাদের সবার অন্যান্য কাজের উপরেও আসবেনা?
মজার ব্যাপার হল,ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা বারবার নিজেদেরকে গণতান্ত্রিক না হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিয়তা দিলেও এরা মানতে নারাজ। বিভিন্ন ছুতো ধরে যে কোন মূল্যেই এদেরকে গনতন্ত্রী সাব্যস্ত করে তারপর বিরুদ্ধে লেখালেখি শুরু।
অথচ আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন প্রচলিত রাজনৈতিক দল ও তাদের কার্যক্রম নিয়ে কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে দেখা যায় না। এমনকি বামদের নিয়েও এদের অত মাথাব্যথা নেই যত মাথাব্যথা ইসলামী রাজনৈতিক দল নিয়ে!!
আমি মনে করি এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অবস্থান পরিস্কারে অধিক মনোনিবেশ করবেন।।যাতে কোন বিক্ষিপ্ত ও বিচ্ছিন্ন চিন্তা তাদেরকে গ্রাস করতে না পারে৷
আমার জানা মতে বহু এমন লোক আছেন যারা একসময় ইসলামী রাজনীতিতে প্রচুর এক্টিভ ছিলেন কিন্তু এখন একেবারেই নিস্ক্রিয়! এমনকি কেউ কেউ তার সাবেক দল ও নেতাকে ইসলামের গন্ডির বাহিরে মনে করে।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে যাবতীয় সীমা*লঙ্ঘন থেকে হেফাজত করুন। খে*লাফপ প্রতিষ্ঠায় তৎপর সবগুলো দলকে আল্লাহ তায়ালা মদদ দান করুন। আমাদেরকে তাদের।সহযোগী ও সহযাত্রী হওয়ার তাওফিক দান করুন।