চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভবন হস্তান্তরের আগেই দেয়ালে ফাটল ধরেছে। গত সপ্তাহে মসজিদের বিভিন্ন অংশের ভেতর ও বাইরের দেয়ালে ফাটল স্থানীয় ব্যক্তিদের নজরে আসে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় এ ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সালের শেষের দিকে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অধীনে মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু হয়।
বাস্তবায়নে রয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় ঢালী কনস্ট্রাকশন নামের এক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কাছে হস্তান্তর না করায় মসজিদটি এখনো ব্যবহার শুরু হয়নি।
বুধবার (৯ অক্টোবর) সরেজমিনে দেখা যায়, ছেংগারচর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হয়েছে মডেল মসজিদটি। মসজিদের সিঁড়ি ধরে এগোলেই নজরে আসে দেয়ালের অনেক জায়গায় ফাটল।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, মসজিদের জায়গায় ঠিকভাবে পাইলিং না করার কারণে তা দেবে গিয়ে দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। নির্মাণকাজে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে, না হলে এভাবে ফাটবে কেন?
বালুচর গ্রামের বাসিন্দা আল-আমীন বলেন, আমরা দেখছি, মসজিদে ফাটল ধরেছে। কী কারণে মসজিদের ভবনে ফাটল দেখা দিল, আমরা এর ব্যাখ্যা বুঝতে চাই না। ফাটলের কারণে আমরা আতঙ্কিত।
ছেংগারচর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. জুনায়েদ হোসেন বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো মসজিদটি হস্তান্তর করা হয়নি। এরই মধ্যে মসজিদে ফাটল দেখা দিয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে, ফাটলের আকার বাড়ছে।
Advertisement
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ঠিকাদার রফিক ঢালী ফোন ধরেননি।
মতলব উত্তর উপজেলা ইসলামি ফাউন্ডেশনের সহকারী ফিল্ড সুপারভাইজার মাওলানা আফজাল হোসেন খান জানান, উপজেলার মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভবনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। দেয়ালের ফাটলের বিষয়টি আমরা শুনেছি। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে গণপূর্ত বিভাগ বরাবর চিঠি দিছি।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা গণপূর্ত বিভাগের উপ-সরকারী প্রকৌশলী লুৎফর রহমান জানান, মডেল মসজিদটির দেয়ালে ফাটলের বিষয়টি আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম। আমরা সরজমিনে তদন্ত-পূর্বক ব্যবস্থা নিব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একি মিত্র চাকমা জানান, মডেল মসজিদের এখনও কাজ চলমান, শতভাগ কাজ শেষেই মসজিদ কমিটিকে বুঝিয়ে দেয়া হবে। আমি মসজিদটি পরিদর্শনে যাব। মডেল মসজিদ নির্মাণ কোনো অবস্থাতেই দুর্নীতি-অনিয়মের ছাড় না দেয়া হবে না।